- রাসায়নিক সাম্যাবস্থা কী
- উভমুখী বিক্রিয়া বলতে কী বোঝ
- জারন সংখ্যা ও যোজনীর পার্থক্য ব্যাখ্যা কর
- লা-শাতেলীয়ার নীতি ব্যাখ্যা কর
- জারক ও বিজারক বলতে কী বোঝায়
- লোহায় মরিচা পড়া রাসায়নিক পরিবর্তন। ব্যাখ্যা কর
- বর্ষাকালে পাকা বাড়ির ছাদ পিচ্ছিল হলে বালু দেয়া হয় কেন
- বিক্রিয়ার হার কী কী বিষয়ের উপর নির্ভরশীল
- রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমানু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না। ব্যাখ্যা কর
- কোন ধরনের বিক্রিয়ায় দর্শক আয়ন উৎপন্ন হয়
- কপার সালফেটে পানি যোজন ঘটলে রং যোগ হয় কেন
- পানিযোজন একটি সংযোজন বিক্রিয়া। ব্যাখ্যা কর
- মোমের জ্বলনে রাসায়নিক ও ভৌত পরিবর্তন হয় কেন
- সংশ্লেষণ বিক্রিয়া বলতে কী বোঝায়
- উভমুখী বিক্রিয়াকে কিভাবে একমুখী বিক্রিয়ায় পরিনত করা যায়
- তাপোৎপাদী ও তাপহারী বিক্রিয়ার পার্থক্য লিখ
- জারন ও বিজারন এর মধ্যে পার্থক্য লিখ
- প্রশমন বিক্রিয়া রেডক্স বিক্রিয়া নয়। ব্যাখ্যা কর
- আ্যমোনিয়াম সায়ানেট ও ইউরিয়া একে অপরের সমানু। ব্যাখ্যা কর
- পানি সংযোজন ও পানি বিশ্লেষণ বিক্রিয়া এক নয়। ব্যাখ্যা কর
- পলিমারকরণ বিক্রিয়া কী
- সমানুকরণ বিক্রিয়া কী
- সমানুকরণ বিক্রিয়ার পরমানুর পূনর্বিন্যাস ঘটে।ব্যাখ্যা কর
- গ্যালভানাইজিং বলতে কী বোঝায়
- বিক্রিয়া সংঘটনের একটি ভালো উপায় হচ্ছে বিক্রিয়কগুলোকে দ্রবীভূত করা। ব্যাখ্যা কর
- রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটনে আলো এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর
- রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটনে তাপ, চাপ এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর
- অত্যানুকুল তাপমাত্রা কী
- প্রভাবক, সহায়ক বা উত্তেজক বা বিবর্ধক বলতে কী বোঝায়
- বিক্রির ঘনমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়ার হার বাড়ে কেন
- সাম্যাবস্থার গতিশীলতা কী
- Fe2+ আয়নটি জারিত ও বিজারিত হতে পারে। ব্যাখ্যা কর
- Na+ একটি জারক। ব্যাখ্যা কর
- MnO4 এ Mn এর জারন সংখ্যা বের কর
- H2S একটি বিজারক পদার্থ কেন
- NaOH + HCl = NaCl + H2O বিক্রিয়াটি প্রশমন বিক্রিয়া কেন
- 2Na + Cl2 = 2NaCl বিক্রিয়াটি একই সাথে সংযোজন ও সংশ্লেষণ কেন
1.
রাসায়নিক
সাম্যাবস্থা কী
রাসায়নিক
সাম্যাবস্থা হল রাসায়নিক প্রক্রিয়ার এমন একটি পরিস্থিতি যাতে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের
পরিমাণের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন সম্মুখ
বিক্রিয়ার গতিবেগ এবং পশ্চাৎ বিক্রিয়ার গতিবেগ
সমান থাকে।
2.
উভমুখী
বিক্রিয়া বলতে কী বোঝ
উভমুখী বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক পদার্থসমূহ বিক্রিয়া করে উৎপাদে পরিণত হয়, একইসাথে উৎপন্ন পদার্থসমূহ বিক্রিয়া করে পুনরায় বিক্রিয়কে পরিণত হয়। উভমূখী বিক্রিয়ায় একইসাথে দুটি বিক্রিয়া চলমান থাকে। উভমুখী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে বিক্রিয়ক ও উৎপাদের মধ্যে উভমুখী তীর চিহ্ন (⇌) ব্যবহার করে বিক্রিয়ার সমীকরণ উপস্থাপন করা হয়।
3.
জারন
সংখ্যা ও যোজনীর পার্থক্য ব্যাখ্যা কর
জারন সংখ্যা ও যোজনীর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ
জারন সংখ্যা |
যোজনী |
ইলেকট্রন ত্যাগ বা গ্রহনের ফলে পরমানুতে সৃষ্ট ধনাত্বক বা ঋনাত্বক
চার্জের সংখ্যাকেই জারন সংখ্যা বলে। |
একটি মৌলের সাথে অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতাই হচ্ছে যোজনী |
জারন সংখ্যা ধনাত্বক বা ঋনাত্বক হতে পারে |
যোজনী সব সময় ধনাত্বক |
জারন সংখ্যা ভগ্নাংশ কিংবা পূর্ন সংখ্যা হয় |
যোজনী সব সময় পূর্ন সংখ্যা,ভগ্নাংশ হয়না |
যোজনী দ্বারা অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার ক্ষমতা বুঝায় |
জারন সংখ্যা দ্বারা অন্য মৌলের সাথে যুক্ত হওয়ার প্রকৃতি প্রকাশ
পায় |
4.
লা-শাতেলীয়ার
নীতি ব্যাখ্যা কর
বিক্রিয়ার
সাম্যবস্থায় সম্মুখমুখী ও বিপরীতমুখী উভয় বিক্রিয়া চলমান থাকে। উভমুখী বিক্রিয়ার
সাম্যবস্থায় উৎপাদের পরিমাণ লা শাতেলিয়ারের নীতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত
হয় । নীতিটি নিম্নরূপ
উভমুখী
বিক্রিয়ার সাম্যবস্থায় বিক্রিয়ার যে কোন একটি নিয়ামক যেমন: তাপমাত্রা/চাপ/ঘনমাত্রা
পরিবর্তন করলে বিক্রিয়ার সাম্যবস্থা এমনভাবে পরিবর্তন হয় যেন নিয়ামক
পরিবর্তনের ফলাফল প্রশমিত হয় ।
5.
জারক
ও বিজারক বলতে কী বোঝায়
জারণ-বিজারণ
বিক্রিয়ায় যে বিক্রিয়ক ইলেকট্রন গ্রহণ করে তা জারক এবং যে বিক্রিয়ক ইলেকট্রন বর্জন
করে তা বিজারক বলে। যেমন:
Zn +
CuSO4 → ZnSO4 +
Cu
এখানে
Cu জারক ও Zn বিজারক।
6.
লোহায়
মরিচা পড়া রাসায়নিক পরিবর্তন। ব্যাখ্যা কর
লোহার তৈরি দ্রব্যকে মুক্ত অবস্থায় রেখে দিলে তা বাতাসের অক্সিজেন
ও জলীয়বাষ্পের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহন করে। লোহা বায়ুর জলীয়বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া
করে মরিচা উৎপন্ন
করে ।
Fe + O2 + H2O → Fe2O3.nH2O(মরিচা)
এখানে
মরিচার ধর্ম Fe, O2 ও H2O
হতে আলাদা। তাই লোহায় মরিচা পড়া রাসায়নিক পরিবর্তন।
7.
বর্ষাকালে
পাকা বাড়ির ছাদ পিচ্ছিল হলে বালু দেয়া হয় কেন
বর্ষাকালে বাড়ির ছাদ পিচ্ছিল করে ক্ষার জাতীয় পদার্থ এবং এ ক্ষারকে
প্রশমিত করার জন্য এসিড জাতীয় পদার্থ যোগ করতে হবে। বালু অম্লধর্মী। তাই বালু যোগ করা
হয়। এতে পিচ্ছিলতা হ্রাস পায়।
8.
বিক্রিয়ার
হার কী কী বিষয়ের উপর নির্ভরশীল
বিক্রিয়ার হার বা গতিবেগ বিক্রিয়ার তাপমাত্রা, বিক্রিয়ার ঘনমাত্রা,
বিক্রিয়কের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল এবং বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত প্রভাবকের উপর নির্ভরশীল । বিক্রিয়ার
তাপমাত্রা, বিক্রিয়ার ঘনমাত্রা, বিক্রিয়কের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধির সাথে বিক্রিয়ার
হার বৃদ্ধি পায় । প্রভাবক ব্যবহারে বিক্রিয়ার হার বৃদ্ধি এবং হ্রাস উ্ভয়ই হতে পারে
। বিক্রিয়ায় ব্যবহৃত প্রভাবকের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে হার বা গতিবেগ বৃদ্ধি বা হ্রাস
পায় । এমনকি প্রভাবকের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে উৎপাদ ও ভিন্ন হয় ।
9.
রাসায়নিক
বিক্রিয়ায় পরমানু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না। ব্যাখ্যা কর
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমানু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয়
না, সাধারণত কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিক্রিয়কে কোন মৌলের যত সংখ্যক পরমাণু থাকে, উৎপাদে ঠিক তত সংখ্যক পরমানু
থাকবে। কোনভাবেই একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়ায় পরমানু সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে না। তাই
বলা যায় যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় পরমানু সৃষ্টি বা ধ্বংস হয় না।
10.
কোন
ধরনের বিক্রিয়ায় দর্শক আয়ন উৎপন্ন
হয়
সাধারনত
নন রেডক্স বিক্রিয়ায় কোন রকম ইলেকট্রন স্থানাস্তর ঘটে না। ফলে বিক্রিয়কের কোন মৌলের
জারণ সংখ্যার পরিবর্তন ঘটে না। এ সকল বিক্রিয়ায় সাধারণত দর্শক আয়ন উৎপন্ন হয়, যা জলীয় দ্রবনে
উপস্থিত থাকে। তবে রেডক্স বিক্রিয়াতেও অনেক সময় দর্শক আয়ন উৎপন্ন হয়।
11.
কপার
সালফেটে পানি যোজন ঘটলে রং যোগ হয় কেন
আনহাইড্রেট
কপার সালফেট বর্ণহীন। এর কেলাসের সাথে পা৭চ অনু পানি যুক্ত হলে এর রঙ পরিবর্তন হয়।
এর কারণ হলো এই পানির অনু কপার সালফেটের কেলাসে যুক্ত হয়ে আলোর লাল ও হলুদ ফোটন শোষণ
করে। যেহেতু লাল ও হলুদ ফোটন শোষিত হয় তাই কেবলমাত্র নীল রঙ প্রতিফলিত হয়। এর কারণে
কপার সালফেটে পানি যোজন ঘটলে রং যোগ হয়।
12.
পানিযোজন
একটি সংযোজন বিক্রিয়া। ব্যাখ্যা কর
আয়নিক যৌগ কেলাস
গঠনের সময় এক বা একাধিক সংখ্যক পানির অণুর সাথে যুক্ত হবার প্রক্রিয়াকে
পানিযোজন বিক্রিয়া বলে। যেমন:
CuSO4 + 5H2O → CuSO4.5H2
আবার দুই বা ততোধিক যৌগ বা মৌল
যুক্ত হয়ে নতুন যৌগ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়ার নাম সংযোজন বিক্রিয়া।
পানিযোজন বিক্রিয়া সংযোজন
বিক্রিয়ার অনুরূপ। এ বিক্রিয়ায় দুটি যৌগ যুক্ত হয়ে একটি যৌগ উৎপন্ন
হয় এবং এতে ইলেকট্রনের স্থানাস্তর হয় না। তাই বলা যায় পানিযোজন একটি সংযোজন
বিক্রিয়া।
13.
মোমের
জ্বলনে রাসায়নিক ও ভৌত পরিবর্তন হয় কেন
মোম কঠিন পদার্থ হলেও এর জ্বলনের সময় মোম গলতে শুরু করে এবং এটি ভৌত
পরিবর্তন। পরবর্তীতে বায়ুর উপস্থিতিতে এর দহন হতে থাকে। এটি রাসায়নিক পরিবর্তন।
মোম পোড়ানোর সময় পদার্থের তিনটি অবস্থা পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া
ঘটে তা হলো-
মোম+O2 → CO2 + H2O +তাপ+ আলো
14.
সংশ্লেষণ
বিক্রিয়া বলতে কী বোঝায়
যে
সংযোজন বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ যুক্ত হয়ে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংশ্লেষণ
বিক্রিয়া বলে। যেমন:
H2 + Cl2 → 2HCl
15.
উভমুখী
বিক্রিয়াকে কিভাবে একমুখী বিক্রিয়ায় পরিনত করা যায়
উভমুখী
বিক্রিয়াকে নিম্নলিখিতভাবে একমুখী বিক্রিয়ায় পরিনত করা যায়
১.
যে কোনো একটি উৎপাদ সরিয়ে নিয়ে
২. যেকোনো
একটি উৎপাদ গ্যাসীয় হলে তা খোলো
পাত্রে সংঘটিত করলে
16.
তাপোৎপাদী ও তাপহারী বিক্রিয়ার পার্থক্য লিখ
তাপোৎপাদী ও তাপহারী বিক্রিয়ার পার্থক্য নিম্নরূপ
তাপোৎপাদী বিক্রিয়া |
তাপহারী বিক্রিয়া |
তাপোৎপাদী বিক্রিয়ায় তাপ শক্তি উৎপন্ন হয় |
তাপহারী বিক্রিয়ায় তাপ শক্তি শোষিত হয় |
এ বিক্রিয়ায় ▲H এর মান ঋণাত্মক
হয়। |
এ বিক্রিয়ায় ▲H এর মান ধনাত্মক
হয়। |
17.
জারন
ও বিজারন এর মধ্যে পার্থক্য লিখ
জারন
ও বিজারন এর মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ
জারন |
বিজারন |
জারন
প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন অপসারিত হয় |
বিজারন
প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রন গৃহীত হয় |
এ
প্রক্রিয়ায় ঋণাত্মক মুলক বা মৌলের সংযোজন ঘটে |
এ
প্রক্রিয়ায় ধনাত্মক মুলক বা মৌলের সংযোজন ঘটে |
18.
প্রশমন
বিক্রিয়া রেডক্স বিক্রিয়া নয়। ব্যাখ্যা কর
প্রশমন
বিক্রিয়ায় জারন মানের কোন পরিবর্তন হয় না বলে প্রশমন বিক্রিয়া রেডক্স বিক্রিয়া নয়।
একটি প্রশমন বিক্রিয়া নিম্নরূপ
Na+OH-
+ H+Cl- →
Na+Cl- + H2O[H+OH-]
এখানে
দেখা যাচ্ছে যে বিক্রিয়ার কোন মৌলের বা যৌগমুলকের জারন মানের পরিবর্তন হয় নি। তাই প্রশমন
বিক্রিয়া রেডক্স বিক্রিয়া নয়।
19.
আ্যমোনিয়াম সায়ানেট
ও ইউরিয়া একে অপরের সমানু। ব্যাখ্যা
কর
একাধিক যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন তারা
একে
অপরের সমানু।আ্যমোনিয়াম সায়ানেট ও
ইউরিয়া পরস্পরের সমানু
।
NH4CNO → NH2-CO-NH2
এখানে উভয় যৌগের আনবিক সংকেত একই
হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন। সুতরাং আ্যমোনিয়াম সায়ানেট
ও ইউরিয়া একে অপরের সমানু ।
20.
পানি
সংযোজন ও পানি বিশ্লেষণ বিক্রিয়া এক নয়। ব্যাখ্যা কর
আয়নিক যৌগ কেলাস
গঠনের সময় এক বা একাধিক সংখ্যক পানির অণুর সাথে যুক্ত হবার প্রক্রিয়াকে
পানিযোজন বিক্রিয়া বলে। যেমন:
CuSO4 + 5H2O → CuSO4.5H2O
কোনো
যৌগের দুই অংশ
পানির বিপরীত আধানবিশিষ্ট
দুই অংশের সাথে
যুক্ত হয়ে নতুন
যৌগ উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে
আর্দ্রবিশ্লেষন বিক্রিয়া বলে। যেমন:
AlCl3
+ 3H2O →
Al(OH)3
+ 3HCl
সুতরাং পানি সংযোজন ও পানি
বিশ্লেষণ বিক্রিয়া এক নয়।
21.
পলিমারকরণ
বিক্রিয়া কী
যে বিক্রিয়ায় অসংখ্য মনোমার থেকে পলিমার উৎপন্ন হয় তাকে পলিমারকরণ বিক্রিয়া বলে ।যেমন: ভিনাইল ক্লোরাইড এর অসংখ্য অণু পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বৃ্হৎ আণবিক ভরবিশিষ্ট নতুন যৌগ পলিভিনাইল ক্লোরাইড গঠন করে ।
nH2C=CHCl(g) → (-CH2-CHCl-)n
22.
সমানুকরণ
বিক্রিয়া কী
কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ায়
যৌগের পরমাণুসমূ্হের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে একটি
সমানু থেকে অপর
একটি সমানু উৎপন্ন হলে
তাকে সমানুকরণ বিক্রিয়া
বলে। এই
বিক্রিয়ায় একই অণুর
মধ্যে পরমাণুসমূহ পূনর্বিন্যস্ত
হয়।
যেমন: আ্যমোনিয়াম সায়ানেট ও
ইউরিয়া পরস্পরের সমানু
।
NH4CNO → NH2-CO-NH2
23.
সমানুকরণ
বিক্রিয়ার পরমানুর পূনর্বিন্যাস ঘটে।ব্যাখ্যা কর
কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ায়
যৌগের পরমাণুসমূ্হের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে একটি
সমানু থেকে অপর
একটি সমানু উৎপন্ন হলে
তাকে সমানুকরণ বিক্রিয়া
বলে। আ্যমোনিয়াম সায়ানেট
ও ইউরিয়া পরস্পরের
সমানু ।
NH4CNO → NH2-CO-NH2
এখানে উভয় যৌগের আনবিক সংকেত একই হলেও গাঠনিক সংকেত ভিন্ন।
তাই বলা যায়, সমানুকরণ
বিক্রিয়ার পরমানুর পূনর্বিন্যাস ঘটে।
24.
গ্যালভানাইজিং
বলতে কী বোঝায়
কোন ধাতুর ওপর দস্তার প্রলেপ দেয়াকেই বলে গ্যালভানাইজিং। সাধাসণত
অধিকাংশ ধাতু বায়ু ও পানির সাথে বিক্রিয়অ করে। ফলে ধাতু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। তাই ধাতুর
ক্ষয় রোধে এর উপর জিংক ধাতুর প্রলেপ দেয়া হয় যাতে ধাতু বায়ু বা পানির সাথে বিক্রিয়া
না করে। এজন্যই গ্যালভানাইজিং করা হয়।
25.
বিক্রিয়া
সংঘটনের একটি ভালো উপায় হচ্ছে বিক্রিয়কগুলোকে দ্রবীভূত করা। ব্যাখ্যা কর
বিক্রিয়া
সংঘটনের ক্ষেত্রে একটি ভালো উপায় হচ্ছে বিক্রিয়কসমূহকে পরস্পরের সংস্পর্শে আনা। বিক্রিয়কসমূহকে
একটি দ্রাবকে দ্রবীভূত করা হলে বিক্রিয়ক অণুগুলো পরস্পরের খুব কাছাকাছি চলে আসে। ফলে
সংঘর্ষ সঠিক মাত্রায় ঘটার সুযোগ পায়। সুতরাং বিক্রিয়া সংঘটনের একটি ভাল উপায় হচ্ছে
বিক্রিয়কগুলোকে দ্রবীভূত করা।
26.
রাসায়নিক
বিক্রিয়া সংঘটনে আলো এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর
রাসায়নিক
বিক্রিয়ায় আলোর ভূমিকা অপরীসিম। এমন কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া আছে যেগুলো অন্ধকারে সংঘটিত
হয় না কিন্তু আলোতে হয়। যেমন: H2 এবং Cl2 এর বিক্রিয়া।
আবার
কোন বিক্রিয়া মৃদু আলোতে এবং কোন বিক্রিয়া প্রখন আলোতে সংঘটিত হয়।
27.
রাসায়নিক
বিক্রিয়া সংঘটনে তাপ, চাপ এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর
তাপের
প্রভাবে রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার ত্বরান্বিত হয়। যেমন KClO3 সাধারণ তাপমাত্রায়
বিয়োজিত হয় না কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রায় পটাশিয়াম ক্লোরাইড অক্সিজেনে বিয়োজিত হয়। যেমন:
KClO3→2KCl+3O2
কোন
কোন ক্ষেত্রে চাপ প্রয়োগ করলে রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। যেমন: চাপের প্রভাবে
Pb ও S এর মধ্যে সংযোগ ঘটে এবং PbS তৈরি হয়।
Pb+S→PbS
28.
অত্যানুকুল
তাপমাত্রা কী
নির্দিষ্ট
চাপে এবং প্রভাবকের উপস্থিতিতে এমন একটি তাপমাত্রা নির্ধারন করা হয় যেন বিক্রিয়ার গতি
এবং উৎপাদ সর্বোচ্চ পরিমাণ হয়,
সেই তাপমাত্রাকে অত্যানুকুল তাপমাত্রা বলে। যেমন: NH3
উৎপাদনে অত্যানুকুল তাপমাত্রা
4500C-5500C নির্ধারন করা হয়েছে। কারন উক্ত তাপমাত্রায় NH3 এর সর্বোচ্চ উৎপাদ পাওয়া যায়।
29.
প্রভাবক,
সহায়ক বা উত্তেজক বা বিবর্ধক বলতে কী বোঝায়
যেসব পদার্থ নিজে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে না কিন্তু কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় প্রভাবকের সাথে উপস্থিত থেকে প্রভাবকের প্রভাবন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, তাদের প্রভাবক সহায়ক বা প্রভাবক বিবর্ধক বলে। যেমন: হেবার বোস পদ্ধতিতে NH3 শিল্পোৎপাদনে Fe3O4 প্রভাবকের সাথে প্রভাবক সহায়ক হিসেবে KOH ও Al2O3 এর মিশ্রণকে ব্যবহার করা হয়। ফলে প্রভাবকের প্রভাবক ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।
N2 + 3H2 → 2NH3
30.
বিক্রিয়ার
ঘনমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়ার হার বাড়ে কেন
বিক্রিয়ার
হার বিক্রিয়ার ঘনমাত্রার উপর নির্ভরশীল। বিক্রিয়ার
সাম্যাবস্থায় যেকোনো বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পায়। এতে নির্দিষ্ট
আয়তনে অনুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এতে অনুসমূহের মধ্যে কার্যকর সংঘর্ষের সংখ্যা বৃদ্ধি
পায়। তাই বিক্রিয়ার হার বেড়ে যায়।
31.
সাম্যাবস্থার
গতিশীলতা কী
উভমুখী
বিক্রিয়ায় রাসায়নিক সাম্যাবস্থা অর্জিত হয়। একটি উভমুখী বিক্রিয়ার শুরুতে বিক্রিয়ক
বিক্রিয়া করে উৎপাদ তৈরি করে। একই সাথে
উৎপাদসমূহও বিক্রিয়া করে
বিক্রিয়কে পরিণত হয়। একসময় সম্মুখ ও পশ্চাতমুখী বিক্রিয়ার হার সমান হয়। এ সময়ই রাসায়নিক
সাম্যাবস্থা অর্জিত হয়। এ অবস্থায় বিক্রিয়া স্থির বলে মনে হয়। কিন্তু আসলে এ অবস্থায়
দুটি বিপরীতমুখী বিক্রিয়অ একই হারে সম্পন্ন হতে থাকে। অর্থাৎ বিক্রিয়া গতিশীল থাকে। সুতরাং বলা যায়, রাসায়নিক
সাম্যাবস্থা একটি গতিশীল অবস্থা।
32.
Fe2+ আয়নটি জারিত ও বিজারিত হতে পারে। ব্যাখ্যা কর
রাসায়নিক
বিক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ প্রক্রিয়া একই সঙ্গে ঘটে ।
বিক্রিয়ায়
আয়নটি ইলেকট্রন গ্রহন করে অর্থাৎ জারিত হয়ে এ পরিনত হয়।
Fe2++2e-→Fe
বিক্রিয়ায়
আয়নটি ইলেকট্রন বর্জন করে অর্থাৎ বিজারিত হয়ে এ পরিনত হয়।
Fe2+-e-→Fe3+
33.
Na+
একটি জারক। ব্যাখ্যা কর
জারন
বিজারণ বিক্রিয়ায় যে বিক্রিয়ক ইলেকট্রন গ্রহণ করে, তাকে জারক বলে। Na+ একটি
জারক কারণ এটি সর্বদা 1টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ধাতুতে পরিনত হয়। Na+ হতে
ইলেকট্রন অপসারণ করতে অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়ে বলে এটি হতে ইলেকট্রন বর্জন করা অসম্ভব।
তাই এটি সর্বদা ইলেকট্রন গ্রহণ করে অর্থাৎ এটি একটি জারক।
Na++
e-→ Na
34.
MnO4
এ Mn এর জারন সংখ্যা বের কর
MnO4
এ Mn এর জারণ সংখ্যা= x
O
এর জারণ সংখ্যা= -2
MnO4
নিরপেক্ষ যৌগ। অতএব, MnO4 এ পরমাণুসমূহের জারন মান 0 হবে।
সুতরাং
x+(-2)4=0
বা,
x-8=0
বা,
x=8
35.
H2S
একটি বিজারক পদার্থ কেন
রাসায়নিক
বিক্রিয়ায় যে পদার্থ ইলেকট্রন বর্জন করে তাকে বিজারক পদার্থ বলে। যেমন:
H2S
+ Cl2 → 2HCl + S
বিক্রিয়াটিতে
এর সালফাইড আয়ন হতে 2টি ইলেকট্রনের বর্জন হয়েছে এবং এর জারন মানের বৃদ্ধি ঘটেছে। তাই
একটি বিজারক।
36.
NaOH
+ HCl = NaCl + H2O বিক্রিয়াটি প্রশমন বিক্রিয়া কেন
যে
বিক্রিয়ায় এসিড ও ক্ষার বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে তাকে প্রশমন
বিক্রিয়া বলে। এখানে NaOH ক্ষার; HCl এসিড; NaCl লবন; H2O পানি। এখানেও
এসিড ও ক্ষার বিক্রিয়ায় লবন ও পানি উৎপন্ন হয়েছে বিধায় বিক্রিয়াটি প্রশমন বিক্রিয়া।
37.
2Na
+ Cl2 = 2NaCl বিক্রিয়াটি একই সাথে
সংযোজন ও সংশ্লেষণ কেন
যে
বিক্রিয়ায় একাধিক মৌল বা যৌগ যুক্ত হয়ে একটি মাত্র যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংযোজন
বিক্রিয়া বলে। যে সংযোজন বিক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক মৌলিক পদার্থ যুক্ত হয়ে একটি মাত্র
যৌগ উৎপন্ন করে তাকে সংশ্লেষণ
বিক্রিয়া বলে। বিক্রিয়াটি
2Na
+ Cl2 = 2NaCl
বিক্রিয়ায়
দুটি মৌল বিক্রিয়া করে 2NaCl উৎপন্ন করে যা সংযোজন ও সংশ্লেষণ বিক্রিয়ার অনুরূপ। তাই 2Na
+ Cl2 = 2NaCl বিক্রিয়াটি একই সাথে
সংযোজন ও সংশ্লেষণ বিক্রিয়া।
0 Comments
thanks for visiting. please comment and subscribe